কমলায় আছে বহুগুণ

কমলার বিষ্ময়কর পুষ্টিগুণ! চলছে শীত মৌসুম। রাস্তায় বেরুলে চোখে পড়ে হরেক রকম কমলা। ভেজালের দুঃশ্চিন্তা থাকা সত্ত্বেও সেই কমলার প্রতি আগ্রহের কমতি নেই ভোক্তাদের। কমলায় আছে বহুগুণ সেই গুণের কথাই আজকে জানার চেষ্টা করবো।

কমলা এক প্রকারের লেবু জাতীয় রসালো জনপ্রিয় ফল। এটি সরাসরি খাওয়া যায় এবং ফ্রুট সালাদেও ব্যবহৃত হয়। কমলা সিলেট বিভাগে কিছু চাষ হয় এবং সুনামগঞ্জের ছাতকে উন্নতমানের কমলা উৎপাদন হয়। তবে উৎপাদনের পরিমাণ খুব বেশি নয়। কাঁচা অবস্থায় সবুজ এবং পাকলে হলদে রং হয়।

ওজন কমানো, ত্বকের পুষ্টি এমন কি হৃদযন্ত্র ভালো রেখে শরীরে রক্ত চলাচল নিয়মিত রাখতে সাহায্য করে কমলা। টক মিষ্টি স্বাদের ফল কমলায় রয়েছে প্রচুর ভিটামিন। কমলার কিছু বিষ্ময়কর গুণ উল্লেখ করা হলো..

তারুণ্য ধরে রাখে
কমলায় রয়েছে নারিজেনিনের মতো বায়োঅ্যাক্টিভ উপাদান যা উন্নত মানের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিইনফ্লামাটর। এছাড়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে শরীরের অক্সিজেনের অণু স্থিতিশীল করতে এবং ফ্রি রাডিক্যালস নিষ্ক্রিয় করতে সাহায্য করে। এই নিষ্ক্রিয় করার ক্ষমতার কারণে ত্বক পরিষ্কার হয় এবং বয়সের ছাপ সহজে পড়ে না। তাছাড়া ত্বক ভিতর থেকে উজ্জ্বল করতেও সাহায্য করে কমলা। তাই একটু বেশি বয়সী মহিলাদের জন্য কমলা খুবই উপকারী।

ভিটামিন ‘সি’র ঘাটতি পূরণ
রক্তে থাকা ক্ষতিকর ও প্রোদাহজনক মৌল থেকে রক্ষা করে ভিটামিন সি। সিট্রাসজাতীয় ফলে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে। আর কমলা হচ্ছে ভিটামিন সি’র অন্যতম উৎস। যা স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে।

ত্বকের জন্য ভালো
কমলার ভিটামিন ত্বক নমনীয়, কোমল এবং সুন্দর করতে সাহায্য করে। প্রসাধনী সামগ্রী তৈরি করতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কমলা ব্যবহার করে।

ওজন কমাতে সাহায্য
কমলা ‘ক্যালরি ফ্রি’ফল হিসেবে পরিচিত। আর এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। তাই কমলার পুষ্টি উপাদানগুলো শরীরের বাড়তি মেদ কমাতে সাহায্য করে। মানুষের জন্য অত্যাবশ্যক পুষ্টি যেমন থিয়ামাইন, নিয়াসিন, ভিটামিন বি সিক্স, ম্যাগনেশিয়াম এবং কপার রয়েছে কমলায়।

ওষুধের কার্যকারিতা বৃদ্ধি
শরীরে ওষুধ গ্রহণে সাহায্য করে কমলা। এই ফলের রস ওষুধের বায়োকেমিক্যাল ও সাইকলজিক্যাল প্রভাব শরীরে গ্রহণের মাধ্যমে দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে। যে কারণে অসুস্থ মানুষকে চিকিৎসকরা বেশি বেশি কমলা খাওয়ার পরামর্শ দেন।

দৃষ্টিশক্তি
চোখের জন্য ভিটামিন এ দরকার। আর কমলায় বেশ ভালো পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে। তাই দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে কমলার ভূমিকা অনন্য।

হৃদস্পন্দন এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
কমলায় আছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ উপাদান যা হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি নিয়মিত রাখতে সাহায্য করে। পটাশিয়াম এবং ক্যালশিয়ামের মতো খনিজ উপাদানগুলো শরীরে সোডিয়ামের প্রভাব নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। কমলার চর্বিহীণ আঁশ, সোডিয়াম মুক্ত এবং কোলেস্টেরল মুক্ত উপাদানগুলো হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
কমলার খোসায় চিনির পরিমাণ নেই বললেই চলে, তাই এটা রক্তে শর্করার মাত্রায় প্রভাব ফেলে। ডায়াবেটিস ও মেটাবলিক সিন্ড্রম রোগীদের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রেণ রাখতে হয়। তাই কমলার পুষ্টিগুণ ডায়াবেটিস রোগী জন্য উপকারী।

ক্যান্সার প্রতিরোধ
কমলায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিনের পাশাপাশি রয়েছে আলফা ও বেটা ক্যারোটিনের মতো ফ্ল্যাভনয়েড অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসহ অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগ যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কমলার উচ্চমাত্রার পুষ্টিগুণ হচ্ছে ফ্ল্যাভনয়েড যা ফুসফুস এবং ক্যাভিটি ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর